লিডিং ইউনিভার্সিটির ফল ২০২৩ সেমিস্টারের নবীনবরণ অনুষ্ঠান শনিবার (২২ জুলাই ২০২৩) সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ইউনিভার্সিটির ৪টি অনুষদের ১১টি বিভাগের ১৭টি প্রোগ্রামের সহস্রাধিক নতুন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম দিন অতিবাহিত করেন আনন্দমুখর পরিবেশে। শিক্ষার্থীদের সাথে বিপুল সংখ্যক অভিভাবকগণও উপস্থিত ছিলেন। অভিভাবকগণ প্রাকৃতিক ছায়াঘেরা লিডিং ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস ও অবকাঠামো দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
লিডিং ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি বৌর্ডের চেয়ারম্যান দানবীর ড. সৈয়দ রাগীব আলীর সভাপতিত্বে নবীনবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট-৩ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব হাবিবুর রহমান হাবিব এমপি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনাব হাবিবুর রহমান হাবিব এমপি বলেন, জ্ঞান অর্জনের জায়গা হলো বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে রয়েছে বিশ্ব সম্পর্কে জানার এবং নিজের দেশকে উন্নয়নের লক্ষ্যে নেতৃত্বদানে নিজেকে তৈরী করার সুযোগ।
এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার সব সুযোগ সুবিধা রয়েছে। শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে রয়েছে পর্যাপ্ত বাসের ব্যবস্থাপনা। ব্রিজ এবং রাস্তা প্রশস্তকরণের কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে। তিনি বলেন, আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামী দিনে দেশের নেতৃত্ব দিবে। তাদের মাধ্যমেই উন্নত আধুনিক বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। তারা সুশিক্ষা না পেলে ভবিষ্যতে দেশ কঠিন অবস্থায় পরবে। দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির লক্ষ্যে তিনি শিক্ষার্থীদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার আহবান জানান। তিনি আরও বলেন, লিডিং ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা দানবীর রাগীব আলীর প্রতিষ্ঠিত স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজসহ অসংখ্য শিক্ষা ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ শিক্ষা ও সেবা পেয়ে যাচ্ছেন, যা আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, এ ধরনের নবীনবরণের সুযোগ আমরা পাইনি, তাই এ অঞ্চলে আজ নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করার সুযোগ পেয়ে গর্ববোধ করছি। তিনি লিডিং ইউনিভার্সিটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা বেগম রাবেয়া খাতুন চৌধুরীকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে বলেন, শৈশবের শিক্ষাজীবনে উনার কাছে অনেক উৎসাহ এবং সহযোগিতা পেয়েছি। শিক্ষায় এ অঞ্চলের সুযোগ সুবিধা ছিল খুবই সীমিত, এখন আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার সব সুযোগ এ অঞ্চলে রয়েছে এবং তাতে রাগীব আলীর অবদান উল্লেখযোগ্য।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের যাতায়তে যে অসুবিধার সম্মুখীন এতদিন হয়েছে তার অবসান শীঘ্রই হতে যাচ্ছে। দুটি ব্রীজ নির্মান এবং রাস্তার উন্নয়নের কাজ প্রায়ই শেষ হয়ে গেছে।
বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার যে স্বপ্ন ছিল তা যে বাস্তবায়ন হয়েছে তা এখানে প্রমাণিত। পদ্মা সেতু এবং মেট্রো রেলের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এদেশে রয়েছে।
পরিশেষে তিনি বলেন, শিক্ষার মানোন্নয়নে আমাদেরকে আরও সচেতন হতে হবে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশি বেশি বই পড়ার প্রবনতা সৃষ্টি করতে হবে। এ দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, স্বাধীনতার চেতনা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে, তাহলেই এদেশে যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি হবে।
নবীন শিক্ষার্থীদেরকে লিডিং ইউনিভার্সিটি পরিবারে স্বাগত জানিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান দানবীর ড. সৈয়দ রাগীব আলী বলেন, লিডিং ইউনিভার্সিটিতে উন্নত শিক্ষা পরিবেশ নিশ্চিত করতে দক্ষ শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। শিক্ষার মানোন্নয়ের লক্ষ্যে অবকাঠামো উন্নয়নের কার্যক্রমও অব্যাহত রয়েছে। এদেশে এখন অনেক কর্মক্ষেত্র তৈরি হয়েছে তাই উচ্চশিক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিদেশ নয় দেশে থেকে নিজের দেশের উন্নয়নে ভুমিকা রাখতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহবান জানান তিনি।
লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. কাজী আজিজুল মাওলা লিডিং ইউনিভার্সিটির নবীনবরণ অনুষ্ঠানে এসে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ প্রদান করার জন্য মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব হাবিবুর রহমান হাবিব এবং লিডিং ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান দানবীর ড. সৈয়দ রাগীব আলীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ও স্বীকৃতি উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা প্রদান করেছে। তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে উন্নত বিশ্বের বেশ কয়েকটি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে লিডিং ইউনিভার্সিটির একাডেমিক সমঝোতা স্মারক সম্পন্ন হয়েছে যেখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাদের উচ্চশিক্ষা এবং গবেষণা কার্যক্রম বিনিময় করতে পারবেন। তিনি লিডিং ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ড. রাগীব আলীর সহযোগিতায় এ বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশ এবং দেশের বাইরে একটি প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
আজ থেকে পড়াশোনার এক নতুন যাত্রা শুরু হলো যেখান থেকে ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার পথ উন্মুক্ত হবে উল্লেখ করে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে লিডিং ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য সৈয়দ আব্দুল হাই বলেন, লিডিং ইউনিভার্সিটি হলো সঠিক জায়গা যেখানে রয়েছে পড়াশোনার সুন্দর পরিবেশ।
তিনি বর্তমান বিশ্বের সাথে তালমিলিয়ে চলার জন্য বিষয়ভিত্তিক দক্ষতা অর্জনের উপর গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শও প্রদান করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ শ্রীযুক্ত বনমালী ভৌমিক বলেন, লিডিং ইউনিভার্সিটির অবকাঠামো উন্নয়ন এবং এলাকার রাস্তাঘাটসহ অন্যান্য উন্নয়নে দানবীর ড. সৈয়দ রাগীব আলী এবং সাংসদ হাবিবুর রহমানের হাবিবের অবদান উল্লেখযোগ্য। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মফিজুল ইসলাম। এতে আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রল্যাণ উপদেষ্টা ও আয়োজক কমিটির আহবায়ক প্রফেসর ড. মো. মাইমুল আহসান খান, বিভিন্ন অনুষদের ডিন মহোদয়ের পক্ষে কলা ও আধুনিক ভাষা অনুষদের ডিন ড. মো. রেজাউল করিম, বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানগণের পক্ষে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রুমেল এম. এস. রহমান পীর।
নবীনদের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ করে দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী লুবাবা বিনতে ফারুক।
পরবর্তীতে কালচারাল ক্লাবের আয়োজনে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। কালচারাল প্রোগ্রামের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন কালচারাল ক্লাবের উপদেষ্টা মিসেস শাম্মী আক্তার।
লিডিং ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আশরাফুন নাহার মেমরি এবং ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সাদাব আশরাফ খানের সঞ্চালনায় নবীনবরণ অনুষ্ঠানে লিডিং ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. লুৎফর রহমানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।