মহানবী (স.) হচ্ছেন বিশ্বমানবতার মুক্তির দিশারি
… শায়খ মূসা আল হাফিজ
‘সীরাতের আলো ঝলকে উঠুক সবার মনে, ইসলামি সংস্কৃতি ছড়িয়ে পরুক সব প্রাণে’ এই প্রতিপাদ্যে লিডিং ইউনিভার্সিটি ইসলামিক কালচারাল ফোরামের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর ২০২৪) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে “সীরাত কনফারেন্স ও নাশিদ প্রোগ্রাম -২০২৪” অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে কী-নোট স্পিকার হিসেবে ‘সাংস্কৃতিক বিকাশ ও পুনর্গঠনে মহানবীর (স.) জীবনাদর্শ’ নিয়ে কী-নোট স্পিকার হিসেবে আলোচনা করেন সেন্টার ফর ইসলামিক থটস এন্ড স্টাডিজ, ঢাকা এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক খ্যাতনামা লেখক, ইসলামি চিন্তাবিদ ও সীরাত গবেষক শায়খ মুসা আল হাফিজ। তিনি বলেন, মহানবী (স.) হচ্ছেন বিশ্বমানবতার মুক্তির দিশারি। তার জীবনের প্রতিটি পর্যায় মানবতার জন্য আলোকবর্তিকা। জন্ম থেকে শৈশব, কৈশোর থেকে যৌবন- জীবনের যে কোনো স্তরে তিনি ছিলেন আদর্শের ধারক। শুধু নবুয়তি জীবনই নয়, নবুয়তপূর্ব জীবনে রাসুল (স.) আদর্শের যে নমুনা স্থাপন করেছেন, তা কেয়ামত পর্যন্ত পৃথিবীর সকল মানুষের জন্য, সত্য ধারণে উর্বর হৃদয়ের জন্য অদ্বিতীয় আলোর উৎস হয়ে থাকবে।
তিনি আরো বলেন, সীরাত মানব জীবনের সর্বোত্তম নমুনা আর সিরাতুন্নবী আলোচনা করলে নবীজীর জন্ম থেকে নবুওয়ত লাভ পর্যন্ত সময়কালের ঘটনাবলি ও অবস্থা জানা যায়। তাছাড়া নবুওয়তপ্রাপ্তি থেকে হিজরত পর্যন্ত সময়কালের ঘটনাবলি ও বিষয়গুলো জেনে সে অনুযায়ী আমল করলে নবীজির খাঁটি উম্মত হওয়া যায়। চল্লিশ বছর বয়সে ইসলামের নবী মুহাম্মাদ (স.) নবুওয়ত লাভ করেন, অর্থাৎ এই সময়েই স্রষ্টা তার কাছে ওহী প্রেরণ করেন।
যে মহামানবের সৃষ্টি না হলে এ ধরাপৃষ্ঠের কোনো কিছুই সৃষ্টি হতো না, যার পদচারণে পৃথিবী ধন্য হয়েছে, আল্লাহর প্রতি অগাধ বিশ্বাস ও ভালোবাসা, অন্তরের পবিত্রতা, আত্মার মহত্ত্ব, ধৈর্য্য, ক্ষমতা, সততা, নম্রতা, বদান্যতা, মিতাচার আমানতদারি, সুরুচিপূর্ণ মনোভাব, ন্যায়পরায়ণতা, উদারতা ও কঠোর কর্তব্যনিষ্ঠা ছিল যার চরিত্রের ভূষণ। যিনি ছিলেন একাধারে ইয়াতিম হিসেবে সবার স্নেহের পাত্র, স্বামী হিসেবে প্রেমময়, পিতা হিসেবে স্নেহের আধার, সঙ্গী হিসেবে বিশ্বস্ত। যিনি ছিলেন সফল ব্যবসায়ী, দূরদর্শী সংস্কারক, ন্যায়বিচারক, মহৎ রাজনীতিবিদ।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে মহানবী (স.) ভূমিকা ও আমাদের করণীয় বিষয়ে আলোচনা পেশ করেন সিলেটের শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল, ইসলামী চিন্তাবিদ ও গবেষক মাওলানা লুৎফর রহমান হুমাইদি।
তারুণ্যের বিকাশ ও ক্যারিয়ার গঠনে মহানবী (স.) এর আদর্শ নিয়ে বক্তব্য পেশ করেন শাহজালাল দারুস্সুন্নাত ইয়াকুবিয়া কামিল মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা কুতবুল আলম।
লিডিং ইউনিভার্সিটির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মুহাম্মদ জিয়াউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মফিজুল ইসলাম।
কবি মীম সুফিয়ানের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে পবিত্র কুর’আন থেকে তিলাওয়া করেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী হাফেজ ওলিউর রহমান এবং নাশীদ পরিবেশন করেন একই বিভাগের শিক্ষার্থী জামেউর রহমান।
সীরাত কনফারেন্স ও নাশীদ প্রোগ্রাম-২০২৪ এ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লিডিং ইউনিভার্সিটির ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. বশির আহমেদ ভুঁইয়া, আধুনিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন রুমেল এম.এস. রহমান পীর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. মাহবুবুর রহমান
প্রোগ্রামের বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে নাশিদ উপস্থাপন করেন জনপ্রিয় শিল্পি আহমদ আব্দুল্লাহ, সিলেটের জনপ্রিয় শিল্পি শালীন আহমদ ও মুজাহিদুল ইসলাম বুলবুল।
ইসলামিক কালচারাল ফোরামের যাত্রালঘ্নে আয়োজিত এই প্রোগ্রামে লিডিং ইউনিভার্সিটি ইসলামিক কালচারাল ফোরামের কমিটি ঘোষণা করেন বিভাগীয় প্রধান ড. মুহাম্মদ জিয়াউর রহমান। নতুন এ কমিটির প্রেসিডেন্ট খন্দকার তানভির ইসলাম, জেনারেল সেক্রেটারি আবুল কাশেম আজাদ এবং অর্গানাইজিং সেক্রেটারি মো. ফাহিম আলম। অনুষ্ঠানে লিডিং ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরব উপস্থিতি ছিল।