রক্তস্নাত বিজয়ের ৫০তম বার্ষিকী ও মহান বিজয় দিবস ২০২১ উদযাপন করেছে সিলেটের প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় লিডিং ইউনিভার্সিটি।
এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর ২০২১) সকাল ১১টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ প্রচার, ১১:১৫টায় লিডিং ইউনিভার্সিটির বঙ্গবন্ধু চত্তরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদমিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করেন লিডিং ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান দানবীর ড. সৈয়দ রাগীব আলী, ট্রেজারার বনমালী ভৌমিক, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য সৈয়দ আব্দুল হাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক -শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।
শ্রদ্ধাঞ্জলি শেষে ক্যাম্পাস থেকে ব্যানার, ফেস্টুন, লাল সবুজের পতাকা এবং বিজয়ের ব্যাজ ধারণসহ একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।
শোভাযাত্রা পরবর্তী সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যালারি-১ এ মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা অনুষ্ঠানে সকলকে বিজয়ের শুভেচ্ছা এবং শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. সৈয়দ রাগীব আলী বলেন, আজ আমরা জাতীয় পতাকা পেয়েছি, আমরা স্বাধীন, তাই সবাই মিলে দেশের উন্নয়ন করতে হবে। দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হবে এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। সেইসাথে শিল্পকারখানা গড়ে তোলতে হবে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন আনতে হবে। তাহলেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন সার্থক হবে।
দাপ্তরিক কাজে বিদেশে অবস্থানরত লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী আজিজুল মাওলা এক বার্তায় সবাইকে বিজয়ের শুভেচ্ছা জানান এবং মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার বনমালী ভৌমিক বলন, আমরা সত্যিই ভাগ্যবান আজ আমরা স্বাধীন। কিন্তু তরুণদেরকে এ স্বাধীনতার প্রেক্ষাপট জানতে হবে। স্বাধীনতার কর্মশক্তিকে ধরে রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবে বর্তমান তরুণদের নেতৃত্বের মাধ্যমে। কিন্তু মনে রাখতে হবে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি এখনো বিরাজমান, তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে। পরিশেষে উন্নত সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে সকল অসাম্প্রদায়িকতা দূরে রেখে সবাইকে একত্রে কাজ করার আহবান জানান তিনি।
বিশেষ অতিথির সৈয়দ আব্দুল হাই বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা, স্বাধীনতা এবং বর্তমান উন্নয়নের দীর্ঘ পরিক্রমার চিত্র তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন।
মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. বশির আহমেদ ভূঁইয়া, বঙ্গবন্ধুর “অসাপ্ত আত্মজীবনী” থেকে পাঠ করেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. মাইমুল আহসান খান, আরও বক্তব্য রাখেন কলা ও আধুনিক ভাষা অনুষদের ডিন ড. মো. রেজাউল করিম, লিডিং ইউনিভার্সিটির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. মোহাম্মদ মোস্তাক আহমাদ। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রেজিস্ট্রার মেজর (অব.) মো শাহ আলম।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক কবিতা আবৃত্তি করেন ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক তৌহিদা সুলতানা, শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্যে বিজয়ের অনুভূতি ব্যক্ত করেন ইইই বিভাগের শিক্ষার্থী শাওন দাস।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তের ঋণ আমরা কোনদিন শোধ করতে পারব না। ১৯৫২ থেকে ৭১ পর্যন্ত তৎকালীন পাকিস্তানি শাসক যেভাবে পূর্ব পাকিস্তানকে শোষণ, বৈষম্যতা ও বঞ্চিত করেছে তার প্রতিবাদেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার স্বাধীনতার ডাক দেন। সেই মহান নেতার শক্ত হাত, মেধা, সাহস ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মাধ্যমে দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করার পর ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে অর্জিত হয় বাংলার বিজয়। তারা আরও বলেন, স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস, বাংলার কৃষ্টি, কালচার ও ঐতিহ্যকে ভবিষ্যত সমাজব্যবস্থার দিক নির্দেশনা হিসেবে নিতে হবে, বাংলাদেশ এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই পড়তে হবে। সঠিক নেতৃত্বের প্রেরণা দিতে হবে। তবেই বর্তমান তরুণ সমাজ তাদের বুকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করতে পারবে।
আলোচনার শুরুতে বাংলাদেশের বিজয়ের তথ্যচিত্র প্রদর্শন করেন ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মো. সাহেদুল আলম খান।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে বিজয়ের আনন্দকে উদ্ভাসিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস ক্লাবের আয়োজনে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রীতি ফুটবল এবং নারী শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের মধ্যে পিলো পাসিং খেলা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সাথে লিডিং ইউনিভার্সিটির আয়োজনে সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে কালচারাল প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়েছে।
লিডিং ইউনিভার্সিটির ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. জাহাঙ্গীর আলম ও ইংরেজি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক রুমপা শারমিনের সঞ্চালনায় অালোচনা অনুষ্ঠানে
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. রাশেদুল ইসলাম, চীফ লাইব্রেরিয়ান ড. মো. রাশেদুল আজিম, বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।