মহান বিজয় দিবসে মুক্তিযুদ্বে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন লিডিং ইউনিভার্সিটি পরিবার। লিডিং ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ানম্যান দানবীর ড. সৈয়দ রাগীব আলীর নেতৃত্বে ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯ সকাল ১০:৩০টায় ক্যাম্পাস থেকে ব্যানার, ফেস্টুন, লাল সবুজের পতাকা, বাদ্যযন্ত্র এবং বিজয়ের ব্যাজ ধারণসহ একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন লিডিং ইউনিভার্সিটি পরিবার। এসময় লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য সৈয়দ আব্দুল হাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধাঞ্জলি পরবর্তী সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যালারী-১ এ মহান বিজয় দিবস ২০১৯ উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লিডিং ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ানম্যান দানবীর ড. সৈয়দ রাগীব আলী। বিশ্ববিদ্যালয়েল উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কামরুজ্জামান চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য সৈয়দ আব্দুল হাই।
বিজয়ের শুভেচ্ছা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্বরণ করে তাঁদের আতœত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দানবীর ড. সৈয়দ রাগীব আলী বলেন, আজ আমরা জাতীয় পতাকা পেয়েছি, আমরা স্বাধীন, তাই সবাই মিলে দেশের উন্নয়ন করতে হবে। আগামী প্রজন্মের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। দেশীয় ইনভেস্টমেন্ট বাড়াতে হবে এবং দক্ষ জনশক্তি তৈরী করতে হবে। তাহলেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন স্বার্থক হবে।
স্বাধীনতা প্রেমীদের স্বরণ করে তিনি তরুণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের নিজেদেরকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। শিল্পায়নের জন্য একত্রে কাজ করতে হবে। সুষ্ঠু ব্যবস্তাপনার মাধ্যমে কাজের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারলে আমরা অনেক কিছু করতে পারি সে দক্ষতা আমাদের রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবদ্ধুর স্বপ্নের সোনালী দেশ বাংলাদেশ আজ তাঁরই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক পরিচালনায় উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে যা অচিরেই বিশ্বের বুকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে।
সভাপতির বক্তব্যে লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আমরা সত্যিই ভাগ্যবান আজ আমরা স্বাধীন। কিন্তু তরুণদেরকে এ স্বাধীনতার প্রেক্ষাপট জানতে হবে। স্বাধীনতার কর্মশক্তিকে ধরে রাখতে হবে। তিনি বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবে বর্তমান তরুণদের নেতৃত্বের মাধ্যমে। কিন্তু মনে রাখতে হবে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি এখনো বিরাজমান, তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে। পরিশেষে উন্নত সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে সকল অসাম্প্রদায়িকতা দূরে রেখে সবাইকে একত্রে কাজ করার আহবান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তের ঋণ আমরা কোনদিন শোধ করতে পারব না। ১৯৫২ থেকে ৭১ পর্যন্ত তৎকালীণ পাকিস্তানী শাসক যেভাবে পূর্বপাকিস্তানকে শোষণ, বৈষম্যতা ও বঞ্চিত করেছে তার প্রতিবাদেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার স্বাধীনতার ডাক দেন। সেই মহান নেতার শক্ত হাত, মেধা, শাহস ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মাধ্যমে দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করার পর ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে অর্জিত হয় বাংলার স্বাধীনতা। তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস, বাংলার কৃষ্টি, কালচার ও ঐতিহ্যকে ভবিষ্যত সমাজ ব্যবস্থার দিক নির্দেশনা হিসেবে নিতে হবে, তবেই বর্তমান তরুন সমাজকে বিপদগামী থেকে রক্ষা করা যাবে।
বিশেষ অতিথির সৈয়দ আব্দুল হাই বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা, স্বাধীনতা এবং বর্তমান উন্নয়নের দীর্ঘ পরিক্রমার চিত্র তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আয়োজক কমিটির কনভেনার কলা ও আধুনিক ভাষা অনুষদের ডীন প্রফেসর নাসির উদ্দিন আহমেদ।
মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, আধুনিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. এম. রকিব উদ্দিন, লিডিং ইউনিভার্সিটির পরিক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. মোস্তাক আহমাদ দীন, রেজিস্ট্রার মেজর (অব) মো শাহ আলম, পিএসসি, প্রক্টর মো: রাশেদুল ইসলাম, আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শিক্ষার্থী প্রীতি রয় প্রমূখ। এতে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন লিডিং ইউনিভার্সিটির ইংরেজী বিভাগের শিক্ষক আবু সাঈদ মো. নাহিদ এবং ক্ষুধে শিল্পী অংকীতা। জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে শুরু হবার পর অনুষ্ঠানে তথ্যচিত্র প্রদর্শন করেন ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক মো. সাহেদুল আলম।
লিডিং ইউনিভার্সিটির ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো: কাউসার হাওলাদারের উপস্থাপনায় আলোচনা সভায় বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিজয় দিবস উপলক্ষে সকালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন লিডিং ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ানম্যান দানবীর ড. সৈয়দ রাগীব আলী এবং উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী।
অনুষ্ঠান শেষে বিজয়ের আনন্দকে উদ্ভাসিত করতে লিডিং ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের নিয়ে এক প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচের আয়োজনও করা হয়।