ইসলাম জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদকে সমর্থণ করে না
—প্রফেসর ড. মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী
আমরা জঙ্গিমুক্ত সমাজ চাই স্লোগানে ‘জঙ্গী ও সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গঠনে ইসলামী শিক্ষার ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনার লিডিং ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাসে ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়েছে। লিডিং ইউনিভার্সিটির এন্টি টেররিজম মনিটরিং সেলের ধারাবাহিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ কর্তৃত আয়োজিত এ সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী এবং প্রধান বক্তা হিসেবে ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আল হাদিস এবং ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মুজাহিদুর রহমান বক্তব্য রাখেন। ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী শামসুল হুদা মুস্তফার উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তিলয়াত করেন হাফিজ রুম্মান আহমেদ এবং হামদ পরিবেশন করেন আব্দুস সবুর।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইসলামিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান ফজলে এলাহি মামুন। ‘জঙ্গী ও সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গঠনে ইসলামী শিক্ষার ভূমিকা’ এর উপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রভাষক মো. জিয়াউর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. এস. এম. আলী আক্কাস এবং বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন, সিলেট এর সহাকারী পরিচালক শাহ মো. নজরুল ইসলাম।
জঙ্গিবাদকে বৈশ্বিক সমস্যা উল্লেখ করে পারিবারিক ও সামাজিক শিক্ষার উপর গুরুত্বারোপ করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. মো কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ইসলাম জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করেনা। এ থেকে মুক্তি পেতে হলে এর সঠিক কারনগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে এবং সঠিক ইসলামী শিক্ষা ও ব্যাখ্যার মাধ্যমে সমাজের তরুনদেরকে জ্ঞান প্রদান করতে হবে। আবেগ এবং অপব্যাখ্যার বিরোদ্ধে সজাগ থাকতে হবে, এতে সমাজ সুরক্ষিত হবে। অভিভাবকবৃন্দ যেন তাদের সন্তানদের সকল বিষয়ে খোঁজ খবর রাখেন ও বিপদগামী পথ থেকে বিরত রাখেন। তিনি সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে জঙ্গিবাদ প্রতিহত করার আহ্বান জানান।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে বিশিষ্ঠ ইসলামিক শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মুজাহিদুর রহমান বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রত্যাশা করি। আবেগী না হয়ে যুক্তিবাদী হতে হবে। ধর্মযুদ্ধ ইসলামে নেই, কাউকে শক্তি প্রয়োগ করে ধর্মে আকৃষ্ট করা যাবেনা। আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যেন আমাদের সন্তানরা সর্বনাশা উৎঁমং থেকে দুরে থাকে। জোয়া বা হাউজি, উৎকোষ বা ঘুষ আদান প্রদান, চুরি, গোষ্টিতন্ত্র এবং বর্ণবাদ সমাজে বেদাবেদ সৃস্টি করে এবং জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদে উদ্বুদ্ধ করে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. এস. এম. আলী আক্কাস বলেন, জঙ্গি ও সন্ত্রাসকে গবেষণামূলক বিষয় হিসেবে নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে একে প্রতিহত করতে হবে। লিডিং ইউনিভার্সিটির এন্টি টেররিজম মনিটরিং সেলের মাধ্যমে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে জঙ্গি ও সন্ত্রাসমমূলক কার্যক্রম যাতে না হতে পারে সেজন্য ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
বিশেষ বক্তা হিসেবে ইসলামিক ফাউন্ডেশন, সিলেটের সহকারী পরিচালক সহাকারী পরিচালক শাহ মো. নজরুল ইসলাম বলেন, মানবতার জন্য কল্যাণ নিশ্চিত করা ইসলামের কাজ। ইসলাম জঙ্গি ও সন্ত্রাস কখনোই সমর্থন করে না, বরং জঙ্গি ও সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গঠনই ইসলামের অন্যতম একটি উদ্দেশ্য। তিনি এধরনের সেমিনারের আয়োজন করার জন্য লিডিং ইউনিভার্সিটির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগকে ধন্যবাদ জানান।
উক্ত সেমিনারে লিডিং ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও ছাত্র-অভিভাবকগন উপস্থিত ছিলেন।