লিডিং ইউনিভার্সিটি গভীর শ্রদ্ধা ও বেদনার সঙ্গে স্মরণ করেছে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের। ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখ সকাল ১১টায় লিডিং ইউনিভার্সিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো: কামরুজ্জামান চৌধুরী এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ট্রেজারার বনমালী ভৌমিক উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে মূখ্য আলোচক ছিলেন লেখক ও গবেষক অধ্যাপক সুনির্মল কুমার দেব মীন।
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও তাদের বেদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘বুদ্ধিজীবী দিবসের তাৎপর্য আমাদেরকে ধারণ করতে হবে। আজ বাঙ্গালী জাতির ইতিহাসে এক বেদনাময় দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল পরাক্রমের সামনে পরাজয় নিশ্চিত জেনে এক নীল নকশার মাধ্যমে জাতিকে মেধাশূন্য করতে হত্যা করেছিল দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, দার্শনিক ও সংস্কৃতিক্ষেত্রের অনেক সূর্য-সন্তানদের। বাঙ্গালী জাতি যাতে মাথা উচু করে না দাড়াতে পারে এবং সামনের দিকে এগিয়ে যেতে না পারে সেই লক্ষ্যে এই হত্যাযজ্ঞ ঘটায় তারা। কিন্তু তাদের এ উদ্দেশ্য সফল হয়নাই’। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বরণ করে তিনি বলেন, ‘তাঁর বুদ্ধিমত্তা ও দৃঢ় নেতৃতে ¡ বাঙালী জাতি পেয়েছে স্বাধীনতা’। বঙ্গবন্ধুর চেতনাকে ধারণ করে তিনি শিক্ষার্থীদেরকে বাংলাদেশের ইতিহাস এবং ঐতিহ্য সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করার পরামর্শও প্রদান করেন তিনি। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য প্রদান করার জন্য তিনি মুখ্য আলোচককে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
আলোচনায় মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন লিডিং ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার বনমালী ভৌমিক। তিনি বঙ্গবন্ধুর চেতনাকে লালন করে দেশের কল্যাণে কাজ করার আহবান জানান।
মাতৃসেবা এবং মাতৃভূমিকে এগিয়ে নিতে হবে উল্লেখ করে মুখ্য আলোচক লেখক ও গবেষক অধ্যাপক সুনির্মল কুমার দেব মীন বলেন, ‘আমার দেশ ও আমার মাতৃভূমিকে সর্বাঙ্গীকভাবে সাজাতে হবে। বুদ্ধিজীবী হত্যা ও আজকের বাংলাদেশ এর উপর আলোকপাত করে তিনি বলেন, ‘কর্মই মানুষের ধর্ম। আজকের এ তরুন প্রজন্মকে সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে একসাথে কাজ করতে হবে। দেশকে যাতে আমরা ভালো কিছু দিতে পারি সেই চেষ্টায় চালিয়ে যেতে হবে। দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে, তাহলেই বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ স্বার্থক হবে।
সভাপতির বক্তব্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও আধুনিক ভাষা অনুষদের ডীন প্রফেসর নাসির উদ্দিন আহমেদ বিভিন্ন ভাষার ‘মা’ শব্দ দিয়ে চিত্রায়িত লিডিং ইউনিভার্সিটির শহীদ মিনারের কথা তুলে ধরে শিক্ষার্থীদের সৃষ্টিশীল হওয়ার পরামর্শ দেন। সবাইকে প্রত্যয় নিতে হবে যে আমি পারবো। তিন বলেন, সুন্দর ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে শহীদদের আত্মাকে উজ্জীবিত করতে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে আজকের এ তরুণ শিক্ষার্থীদেরই।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন লিডিং ইউনিভার্সিটির পরিক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. মোস্তাক আহমাদ দীন। এসময় আধুনিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. এম. রকিব উদ্দিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. রাশেদুল আলমসহ বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ইংরেজী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মানফত জাবিন হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে তথ্যচিত্র প্রদর্শন করেন ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক মো. সাহেদুল আলম খান।
আলোচনার পূর্ববর্তী শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান ও এক মিনিট নীরবতা পালন করেন লিডিং ইউনিভার্সিটি পরিবার।